WB Migrant Workers For Stay Local, Work Local – রাজ্যের অর্থনৈতিক কাঠামোতে শ্রমিক শ্রেণীর অবদান অনেক। কিন্তু রাজ্যে কর্মস্থানের অভাব হওয়ায় রাজ্যের যুবক থেকে শুরু করে শ্রমিক সকলেই অন্য রাজ্যে যায়। এরজন্যই রাজ্য সরকার গত বছর কর্মশ্রী প্রকল্প চালু করে।
এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হল বেকার যুবক- যুবতী ও পরিযায়ী শ্রমিকদের কর্ম সংস্থান দেওয়া। এবার সেই প্রকল্প নিয়েই নতুন ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। আশা করা হচ্ছে এতে প্রকল্পের পরিধি ও কার্যকারিতা বাড়ানো হবে।
কী এই কর্মশ্রী প্রকল্প ?
‘কর্মশ্রী’ প্রকল্প হল রাজ্য সরকারের একটি প্রকল্প যেটির সাহায্যে প্রতিবছর ন্যূনতম ৫০ দিনের কাজ দেওয়া হয়। এই প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য হল বেকার যুবসমাজ ও কাজের জন্য বাইরে যাওয়া শ্রমিকদের রাজ্যে ফেরানো এবং তাদের কাজ দেওয়া। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি বীরভূমের একটি সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে কর্মশ্রী প্রকল্প নিয়ে একটি নতুন দিকনির্দেশের ঘোষণা করেন।
তিনি এটিও বলেন যে যারা বাংলার বাইরে গেছেন তারা যেন বাংলায় ফিরে আসেন। তিনি এটিও বলেন, “পরিযায়ী শ্রমিকদের বলুন বাংলায় ফিরে আসতে, এখানে কাজের সমস্যা আর নেই।
এমনকি সেখান থেকে ফিরে আসার ভাড়া আমরা দেব। কর্মশ্রী প্রকল্পে তাদের কাজ দেব।পাশাপাশি ছেলে-মেয়েদের স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেব।” তিনি এটিও বলে দেন যে রাজ্য সরকার সেই কর্মীদের যাত্রার ব্যয় (WB Migrant Workers For Stay Local, Work Local) বহননিষিদ্ধ করবে। রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকরা প্রায়ই অন্য রাজ্যে গিয়ে সামাজিক নিরাপত্তা থেকে বঞ্চিত হন। এই কর্মশ্রী প্রকল্প হল তাদের কর্ম নিরাপত্তা ও সম্মান দেওয়া।
কেন্দ্র সরকার কর্মীদের ১০০ দিনের কাজের প্রতশ্রুতি দেয় ও রাজ্য সরকার ৫০ দিনের কর্মসংস্থান দেয়। কিন্তু এর পাশাপাশি রাজ্য সরকার স্কিল ডেভেলপমেন্ট ট্রেনিং, সরকারি প্রকল্পে শ্রমনির্ভর কাজ করার সুবিধা এবং কর্মতীর্থে দোকান বরাদ্দ ইত্যাদি নানা সুবিধাও দিতে চলেছে। কর্মশ্রী প্রকল্পের সুবিধা পেতে অবশ্যই বৈধ জব কার্ড বানাতে হবে এবং রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
এখানে কীভাবে আবেদন করবেন ?
১. সবার প্রথমে আপনাকে এর সংশ্লিষ্ট ব্লক অফিস বা পঞ্চায়েতে গিয়ে আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে হবে।
২. তারপর আপনার পরিচয়পত্র, ঠিকানার প্রমাণ এবং ভোটার আইডি জমা দিয়ে দিতে হবে।
৩. যদি আপনার জব কার্ড না থাকে তাহলে আগে সেটি বানিয়ে নিতে হবে।
৪. এরপর আবেদনপত্র পূরণ করে জমা দিয়ে প্রাপ্তি স্বীকারপত্র কাছে রাখতে হবে
৫. পরে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেটি যাচাই করা হলেই আপনার কাজ বরাদ্দ হয়ে যাবে।
এই প্রকল্পে যারা যারা রাজ্য থেকে বাইরে কাজ করতে গিয়েছিলেন তাদের, এলাকার বসবাসকারী বেকার যুবক-যুবতী,আর্থিকভাবে দুর্বল পরিবারের সদস্য, মহিলারা এবং বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। শুধু তাই নয় কর্মীদের বিভিন্ন স্কিল বেসড প্রশিক্ষণের সুযোগও দেওয়া হবে।
যেই স্কিল প্রশিক্ষণের মধ্যে রয়েছে ইলেকট্রিশিয়ান, প্লাম্বার, ফিটার, কৃষি ও পশুপালন প্রশিক্ষণ, হ্যান্ডিক্র্যাফট বা হস্তশিল্প ইত্যাদি।এই প্রকল্পে কর্মতীর্থ দোকান বরাদ্দ করা হবে। যারা যারা কাজ করতে চান ও নিজের উদ্যোগ চালু করতে চান তাদেরকে দোকান বা ব্যবসার জায়গা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বরাদ্দ করে দেওয়া হবে।
এই প্রকল্পটি রাজ্য সরকারের একটি বড় পদক্ষেপ। এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্য সরকার মধ্যবিত্ত, বেকার ও শ্রমিক শ্রেণীকে স্বনির্ভর করার জন্য কাজ করবে। এছাড়াও সরকারি পরিষেবা ও অবকাঠামোগত প্রকল্পগুলোকে দ্রুত বাস্তবায়িত করার চেষ্টা করবে। কাজের বিনিময়ে সম্মানজনক জীবনধারা গড়ে তোলায় উদ্দেশ্য এই প্রকল্পের। রাজ্য সরকারের এখন একটিই উদ্দেশ্য সেটি হল রাজ্যের সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলায় ফিরিয়ে আনা।
পশ্চিমবঙ্গে DA নিয়ে স্বস্তির হাওয়া! সুপ্রিম কোর্টে ইতিবাচক রায়, রাজ্য সরকারি কর্মীরা দেখুন