Ratan Tata Biography – বহু মানুষের আইডল শিল্পপতি রতন টাটা! অনুপ্রাণিত করে যুব সমাজকে

Ratan Tata Biography – ভারতীয় শিল্পপতিদের মধ্যে মানুষ হিসেবে খাঁটি কে? রতন টাটা, হ্যাঁ একবাক্যে এই উত্তর দেবেন সকলেই। তিনি দেশের সবচেয়ে সফল ব্যবসায়ীদের মধ্যে একজন এবং তার জনহিতকর কাজ এবং দূরদর্শিতার জন্য ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব। এই প্রবন্ধে সেই মানুষটিকে নিয়েই আলোচনা করব।

জন্ম ও প্রাথমিক জীবন

১৯৩৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর বম্বেতে জন্মগ্রহণ করেন রতন টাটা। নেভাল টাটা এবং সুনি কমিশনারিয়েটের সন্তান তিনি। জামসেটজি টাটার ছোট ছেলে রতনজি টাটা নেভাল টাটাকে তার ছেলে হিসেবে দত্তক নেন। মাত্র ১০ বছর বয়সেই মা-বাবার বিচ্ছেদ নিজের চোখেই দেখেছিলেন রতন টাটা। তাঁর দাদী, নভজবাই টাটা তাঁকে এবং তাঁর সৎ ভাই নোয়েল টাটাকে বড় করে তোলেন।

শিক্ষাজীবন

বম্বের ক্যাম্পিয়ান স্কুলে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন রতন টাটা। এরপর বম্বের ক্যাথেড্রাল এবং জন কনন স্কুল এবং সিমলার বিশপ কটন স্কুলে পড়াশোনা করেন। প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করার পর ১৯৫৫ সালে, তিনি নিউ ইয়র্ক সিটির রিভারডেল কান্ট্রি স্কুল থেকে স্নাতক হন রতন। কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চার বছর পর, তিনি স্থাপত্যে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র।

কর্মজীবন (Ratan Tata Biography

১৯৬২ সালে নিজেদের কোম্পানির খনি শ্রমিক হিসেবে নিজের কর্মজীবন শুরু করেন রতন টাটা। ভীষণ কঠিন কাজ হলেও মা-বাবার ব্যবসা সম্পর্কে আরো বেশি করে জানতে এই কাজটাই তাঁকে সাহায্য করেছিল। J.R.D এর পর টাটা সন্সের চেয়ারম্যানের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন রতন। তবে ১৯৯১ সালে পদত্যাগ করেন। সেই সময় কিছু বিরোধিতার মুখে পড়েছিলেন তিনি। তবে সেই সমস্ত প্রতিরোধকে জয় করে আজ তিনি রতন টাটা। রতন টাটার তত্ত্বাবধানে টাটা গ্রুপ ৪০% বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছে এবং লভ্যাংশ পেয়েছে ৫০ শতাংশ। জাগুয়ার, টেটলি এবং ল্যান্ড রোভার এবং কোরাস স্টিলের মতো প্রধান বহুজাতিক কর্পোরেশনগুলিতে রতন টাটার বিনিয়োগ ছিল বড় পদক্ষেপ।

রতন টাটার উল্লেখযোগ্য কর্মকাণ্ড

টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যান হিসেবে রতন টাটা ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেছেন। তাঁর তত্ত্বাবধানে জাগুয়ার, টেটলি, ল্যান্ড রোভার এবং কোরাসের মতো কোম্পানি কিনে বর্তমানে টাটা গ্রুপ একটি বহুজাতিক কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে। টাটা গ্রুপ তার উল্লেখযোগ্য ব্যবসায়িক সাফল্যের কারণে নিউ ইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হয়েছিল। Tata Nano এবং Tata Indica উন্নয়নের মূল কান্ডারী রতন টাটা। ভারতীয়দের জীবনযাত্রার মান উন্নত করার লক্ষ্য নিয়ে রতন টাটা ৬৫ শতাংশ সম্পদ জনহিতকর কাজের দান করেন।

i) হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল যেখান থেকে রতন টাটা সাত সপ্তাহের অ্যাডভান্স ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রাম করেছিলেন, সেই স্কুলকে ২০১০ সালে টাটা গ্রুপ এন্টারপ্রাইজ এবং টাটা দাতব্য সংস্থা ৫০ মিলিয়ন টাকা দিয়েছে এক্সিকিউটিভ সেন্টার প্রতিষ্ঠার জন্য। এরপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, কার্যনির্বাহী কেন্দ্রের নাম রতন টাটার নামে নামকরণ করা হবে।

ii) টাটা কন্‌সাল্টেন্সি সার্ভিসেস বা টিসিএস একটি (Ratan Tata Biography) ভারতীয় তথ্য প্রযুক্তি সংস্থা। এটি ভারতের সবথেকে পুরনো এবং সবথেকে বড় তথ্যপ্রযু্ক্তি এবং বিপিও সংস্থা। এটি এশিয়ার সবথেকে বড় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাও বটে। এই সংস্থাটিতে তিন লক্ষ উনিশ হাজারের বেশি কর্মী কাজ করেন।

iii) টাটা গ্রুপের একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান হল টাটা এডুকেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্ট। ২৮মিলিয়ন টাকার তহবিল সংগ্রহের জন্য টাটা এই প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছে। ৷

iv) অ্যালঝাইমার রোগের কারণ খুঁজে বের করার জন্য ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সের সেন্টার ফর নিউরোসায়েন্সকে ৭৫০ মিলিয়ন টাকা দিয়েছে টাটা ট্রাস্ট।

রতন টাটার TATA-এর মালিকানাধীন কোম্পানির তালিকা

i) Tata Consultancy Services – ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দে টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস স্থাপিত হয়। তখন এর নাম ছিল টাটা কম্পিউটার সেন্টার। পরবর্তীকালে ১৯৯০ এর দশকে এই সংস্থাটির অভূতপূর্ব উন্নতি ঘটে। ভারতের প্রায় কুড়িটি শহরে এই সংস্থার অফিস রয়েছে। এছাড়া ভারতের বাইরেও বহু জায়গায় এই সংস্থার অফিস রয়েছে।

ii) Jaguar Land Rover – জাগুয়ার ল্যান্ড রোভার অটোমোটিভ পিএলসি হল জাগুয়ার ল্যান্ড রোভার লিমিটেডের হোল্ডিং কোম্পানি , এটি জেএলআর নামেও পরিচিত এবং এটি একটি ব্রিটিশ বহুজাতিক অটোমোবাইল প্রস্তুতকারক যা বিলাসবহুল যানবাহন এবং স্পোর্ট ইউটিলিটি যান তৈরি করে । জাগুয়ার ল্যান্ড রোভার টাটা মোটরসের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান এবং এর প্রধান কার্যালয় হুইটলি, কভেন্ট্রি , যুক্তরাজ্যে রয়েছে।

iii) Tata Steel Limited – টাটা স্টিল লিমিটেড হল একটি ভারতীয় বহুজাতিক ইস্পাত তৈরির কোম্পানি, যা ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরে অবস্থিত এবং মুম্বাই , মহারাষ্ট্রে সদর দফতর। এটি টাটা গ্রুপের একটি অংশ। ১৯০৭ সালে, টাটা স্টিল লিমিটেড উৎপাদন শুরু করে। জামসেটজি টাটা কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

iv) Titan Company Limited – টাইটান কোম্পানি লিমিটেড হল একটি ভারতীয় পণ্য কোম্পানি যেটি প্রধানত গহনা, ঘড়ি এবং চশমার মতো ফ্যাশন সামগ্রী তৈরি করে। টাটা গ্রুপের অংশ এবং তামিলনাড়ু ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন এর সাথে একটি যৌথ উদ্যোগ হিসাবে শুরু করা, কোম্পানিটির কর্পোরেট সদর দপ্তর রয়েছে ইলেক্ট্রনিক সিটি, ব্যাঙ্গালোরে।১৯৮৪ সালে চালু হয় এই কোম্পানি।

v) Tata Power Company Limited – টাটা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড হল একটি ভারতীয় বৈদ্যুতিক ইউটিলিটি এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন কোম্পানি যা ভারতের মুম্বাইতে অবস্থিত এবং এটি টাটা গ্রুপের অংশ। 14,110 মেগাওয়াটের একটি ইনস্টল করা বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা যার মধ্যে 5250 মেগাওয়াট অপ্রচলিত উৎস থেকে পাওয়া যায় তাপ থেকে বাকি, এটি ভারতের বৃহত্তম সমন্বিত বিদ্যুৎ কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে।

মোট অর্থসম্পত্তি(Ratan Tata Biography)

রতন টাটা 1990 সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত টাটা গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান। তাঁর সম্পত্তির মোট মূল্য এক বিলিয়ন ডলার বা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৭৪১৬ কোটি টাকা। তিনি তার মোট সম্পত্তির ৬৫ শতাংশ সংস্থায় কাজে লাগান সেই কারণেই এই অর্থের পরিমাণকে রতন টাটার আর্থিক বিবরণীতে নথিভুক্ত করা হয় না।

রতন টাটার অন্যান্য সম্পত্তি

i) বাড়ি:- মুম্বাইতে রতন টাটার বাসভবন রয়েছে। ২০১৫ সালে তিনি এই বাড়ি ক্রয় করেন। এই বাড়িটির মূল্য দেড়শ কোটি টাকা।

ii) অটোমোবাইলস: রতন টাটার গাড়ির সংগ্রহ চোখে পড়ার মতো। গাড়ির তালিকায় রয়েছে Maserati Quattroporte, Ferrari, Mercedes-Benz, Honda Civic, Range Rover, Chrysler Sebring, Jaguar, Cadillac XLR, এবং Buick Super 8.

অ্যাওয়ার্ড এবং সাম্মানিক

নিজের জনহিতৈষী কাজের জন্য বহু পুরস্কার পেয়েছেন রতন টাটা। ২০০০ সালে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান পদ্মভূষণ পান তিনি। ২০০৭ সালে লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্স অ্যান্ড পলিটিকাল সায়েন্স তাঁকে অনারারি ফেলোশিপ প্রদান করে। ২০০৮ সালে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান পদ্ম বিভূষণ লাভ করেন রতন টাটা। ২০০৯ সালে ইতালি সরকার তাকে ইতালীয় প্রজাতন্ত্রের অর্ডার অফ মেরিটের “গ্র্যান্ড অফিসার” উপাধি প্রদান করে। ২০১০ সালে বিজনেস ফর পিস ফাউন্ডেশনের ‘অসলো বিজনেস ফর পিস অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া হয়।

নতুন চাকরির খবর – BSF নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলো, মাধ্যমিক পাশ যোগ্যতায় নিয়োগ

বিঃদ্রঃ– উপরের তথ্যগুলো কেবলমাত্র ছাত্র – ছাত্রীদের কাজের উদ্দেশ্য। wbtak.com শুধুমাত্র বিভিন্ন সরকারি চাকরি,সরকারি প্রকল্প, স্কুল-কলেজের খবর ইত্যাদি বিষয়ে আপডেট দেওয়ার জন্যই তৈরি করা। এটা কোন নিয়োগ সংস্থা নয় এবং নিয়োগ পরিচালনা করে না। এটা সারা ভারত জুড়ে খবর সংগ্রহ করে প্রকাশিত করে। wbtak.com সর্বদা চেষ্টা করে নির্ভুল আপডেট প্রকাশ করার তবুও আমাদের অবচেতন মনে যদি কোন ভুল হয়ে যায় যেমন (পদের সংখ্যা, শূন্যপদের সংখ্যা, আবেদন করার লাস্ট তারিখ ইত্যাদি) বিষয়ে ভুলের জন্য আমরা দায়ী নই।

আবেদন কারীদের অনুরোধ করা হচ্ছে আপনারা অতি অবশ্যই সংস্থার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ও অফিসিয়াল নোটিফিকেশন নিজে থেকে ভালো করে যাচাই করবেন, দেখবেন, বুঝবেন তবেই নিজের দায়িত্ব আবেদন করতে পারেন।